পরিবেশ রক্ষায় হাওড়ার ইঁটভাটা ঘুরল সান্তা ক্লজ
ওয়েব ডেস্কঃ
আদিবাসী সংস্কৃতি ও জীবনচর্চার সাথে অনেক সময়ই বন্যপ্রাণ শিকারের একটা বিষয় জড়িয়ে থাকে। হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ দীর্ঘ তিনবছর ধরে হাওড়ায় বসবাসকারী আদিবাসীদের শিকার উৎসবের নামে বিপন্ন বন্যপ্রাণী হত্যালীলার বিরুদ্ধে একরোখা অভিযান চালিয়ে আসছে। অনেক সময়ই খবর পাওয়া যায় ইঁটভাটার আদিবাসী শ্রমিকরা তীরধনুক, বর্শা, বল্লম নিয়ে বন্য খটাশ, কাঠবেড়ালী, বাঘরোল, গন্ধগোকুল এমনকি নানান প্রজাতির পাখি শিকার করে। ফল স্বরূপ অনেকসময় তাঁরা পুলিশের হাতে ধরাও পড়েন। শাস্তি হয় তাঁদের। পরিবেশ মঞ্চের কাছে মানবতাকর্মীদের আবেদন আসে – এই সব অসহায় গরীব মানুষদের জীবন ও জীবিকার প্রশ্নে, কীভাবে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টির সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটা মধ্যপন্থা বার করা যায়। এ প্রশ্ন দীর্ঘ দিনের।

বড়দিনের আবহে সেই কাজই করল হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ। মঞ্চের সম্পাদক শুভ্রদীপ ঘোষ পৌঁছে যান শ্যামপুরের একাধিক ইঁটভাটায়। সঙ্গে ছিলেন সঙ্গীতা গিরি ও অনির্বাণ সেনাপতি। সেখানে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন ভিনরাজ্য থেকে আসা সাঁওতাল জনজাতির মানুষজন।
তাদের বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো, বড়দের হাসিমুখে বোঝানোর পাশাপাশি তাদের হাতে তুলে দেন বড়দিনের উপহার।

দীর্ঘ লকডাউনে এই সমস্ত আদিবাসীদের আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। ২৫ ডিসেম্বর পরিবেশ মঞ্চের তরফে ১০০টি বাচ্চার হাতে তুলে দেওয়া হয় মাস্ক, সোপ পেপার, আর বেশ কিছু খাবারদাবার। শিশুরাও হৃদয়ের উস্নতায়, অলচিকি ভাষায় ধন্যবাদ জানায় পরিবেশ মঞ্চের সদস্যদের।

বড়দিনে এ যেন এক অন্য সান্তা। যে সান্তারা অদৃশ্য এক ঘণ্টা বাজিয়ে জানিয়ে দিল পরিবেশ রক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে সব্বাইকে। আদি জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা, পরিবেশ কর্মীদের সচেতনতা আর তার সাথে খেয়াল রাখতে হবে মানবাধিকারের বিষয়টাও। এই তিনের মেল বন্ধনেই গড়ে উঠবে প্রকৃত সুন্দর পৃথিবী। হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ সেই বার্তাই যেন দিয়ে গেল এই বড়দিনে।